অনিয়ম-দুর্নীতি চলবেই?
- আপলোড সময় : ০২-০২-২০২৫ ১২:৩২:০৪ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ০২-০২-২০২৫ ১২:৩২:০৪ পূর্বাহ্ন
একজন বলেছেন, ‘সমাজে এখনও বৈষম্য বিরাজমান’। তিনি একজন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ। তাঁর নাম না করেই তাঁকে ধন্যবাদ নিবেদন করছি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলকদের সঙ্গে কথা বলার সময় সামাজিক বৈষম্যের কথা বিশেষভাবে প্রচার করার জন্যে।
সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে সামাজিক বৈষম্যের কথা অধিক মাত্রায় প্রচার হচ্ছে বটে, কিন্তু বৈষম্য উদ্ভবের মূল কারণ নির্মূলের রাজনীতি থেকে সরে থাকা হচ্ছে সচেতনভাবেই কিংবা হতে পারে নিজের অজান্তেই। এমনটা যদি অজান্তেই হয়ে থাকে তা হলে এ ক্ষেত্রে জানিয়ে দেওয়া দরকার যে, বৈষম্যের মূল কারণ হলো বর্তমান আর্থসামাজিক বিন্যাস কাঠামো। অর্থাৎ নয়া ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্যের পদতলে আত্মসমর্পণকৃত আর্থনীতিক ও রাজনীতিক নীতি। এই নীতির কারণেই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সফলতা স্বরূপ রাষ্ট্রক্ষমতায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলকরা অধিষ্ঠিত নয় বা হতে পারেন নি। এটাই দেশের সাম্প্রতিক রাজনীতিক বাস্তবতা। এই কারণেই বৈষম্যবিরোধী রাজনীতিক নেতাদের ভাষ্যে বৈষম্যের প্রসঙ্গ যতোটা প্রকাশ্যে আসে এর কারণ নির্মূলের কথা ততোটাই আড়ালে পর্যবসিত হয়। তাঁরা বৈষম্যের মূল কারণ পুঁজির প্রভুত্বের বিরুদ্ধে কিংবা মুক্তবাজার অর্থনীতির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে শ্রমশোষণের বিরোধিতার রাজনীতি করতে পারেন না। আরও স্পষ্টভাবে বললে বলতে হয় উৎপাদনী উপায়ের মালিক শ্রেণি কর্তৃক অপরের শ্রমফল আত্মসাৎ করার অর্থনীতিকে উৎখাত করতে না পারলে বৈষম্য নিরনন কোনওভাবেই এবং কোনও দিনই সম্ভব নয় বা অনিবার্যভাবে হবে না।
একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, “মেডিকেলে অনিয়ম দুর্নীতি হয়, এগুলো তদারকি করা হচ্ছে। এছাড়াও অন্যান্য সরকারি দপ্তরে আমাদের টিম খোঁজখবর রাখবে, সেখানে সঠিকভাবে কাজ হচ্ছে কি না, তারা নিয়মিত দেখভাল করবে, খোঁজ নিবে।” খুব ভালো কথা। কিন্তু প্রতিষ্ঠিত ব্যবস্থারূপ যে-যন্ত্রদানবটা প্রতিনিয়ত নতুন নতুন অনিয়ম-দুর্নীতি কেবল প্রসব করেই চলবে তার কী হবে, সে-আর্থনীতিক দুর্বৃত্তটার রাজনীতির লাগাম টানবে কে? যে-রাজনীতি ইতোমধ্যে বৈষম্যবিরোধীদের চিরদিনের জন্যে অনিয়ম-দুর্নীতি ঠেকানার অবৈতনিক চাকরি দিয়ে দিয়েছে এবং অপরদিকে নিজে আরও আরও খতরনাক অনিয়ম-দুর্নীতি করেই চলবে পুরোদমে? বিষয়টা অনেকটা পৌরসভার রাস্তাঘাটে মলবর্জ্য জমার মতো, পরিচ্ছন্নতাকর্মী সেটা পরিষ্কার করার দায়িত্বে আছে, আর কি। চমৎকারিত্ব আর কাকে বলে। যে-চমৎকারিত্বের গুণে যতোসব ‘অনিয়ম দুর্নীতি হওয়ার তদারকি’ ও ‘সঠিকভাবে কাজ হচ্ছে কিনা তার দেখভাল করা’ কোনও দিনই ফুরাবে না।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ